এই টিপসগুলি ফলো করলে আপনি পারফেক্ট সিভি বানাতে পারবেন।
সিভি আপনার জীবনের একটি মৌলিক ডকুমেন্ট, যা আপনার যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, এবং দক্ষতা সম্পর্কে মানদন্ড সেট করে থাকে। নিজেকে এক্সপ্রেস করার জন্য আপনার সিভি বা রিজুমি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার ক্যারিয়ার এর উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আপনার সিভি অথবা রিজুমি তৈরি করার সময় নিম্নলিখিত টিপস মনে রাখতে হবে যেটা ফ্রেশারদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন:
1. ব্যক্তিগত তথ্যঃ রিজুমিতে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য যেমন “নিজের নাম, মোবাইল, ইমেইল, লিংকডিন (যদি থাকে) এবং বর্তমান ঠিকানা (মিরপুর-১, ঢাকা) এর বেশী কিছু দেয়ার প্রয়োজন নেই।
কিছু অপ্রয়োজনীয় তথ্য: অনেকেই তথ্য বাড়াতে এবং বড় করার জন্য স্থায়ী ঠিকানা, বাবার নাম, মাতার নাম, এনআইডি, পাসপোর্ট, উচ্চতা, ওজনসহ অনেক কিছু দিয়ে থাকেন। এগুলো সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়।
2. ক্যারিয়ার অবজেক্টিভঃ আপনি যদি ফ্রেশার হয়ে থাকেন, তাহলে পড়াশুনার ব্যকগ্রাউন্ড এবং দক্ষতার সাথে মিল রেখে ক্যারিয়ার অবজেক্টিভ লিখবেন। দক্ষতা কাজে লাগিয়ে আপনি কোম্পানিতে কেমন অবদান রাখতে চান, এগুলো উল্লেখ করতে পারেন। ক্যারিয়ার অবজেক্টিভ নির্ভুল বানান এবং গ্রামার ঠিক রেখে ৩/৪ লাইনে লিখলেই ভালো।
3. স্কিলসঃ রিজুমিতে স্কিলস এর জন্য আলাদা একটি সেকশন রাখা ভালো। এখানে আপনার অর্জিত দক্ষতাগুলো পয়েন্ট আঁকারে তুলে ধরতে পারেন। মনে করি, আপনি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ারপয়েন্ট, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, গুগল ড্রাইভ সম্পর্কে ভালো জানেন। এগুলো আপনার স্কিল হিসেবে তুলে ধরতে পারেন। যদি এডোব ইলাস্ট্রেটর, ফটোশপ, কিংবা ওয়েব ডিজাইন বা ডেভেলপমেন্ট জানেন, সেই সম্পর্কিত স্কিলসগুলোও দিতে পারেন। এছাড়াও অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ভলান্টারি সংগঠনের সাথে জড়িত থাকেন। সেখানে কাজ করেন, প্রোগ্রাম আয়োজন করেন। এ ধরনের প্রোগ্রামে কাজ করে আপনি “ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, টিম বিল্ডিং, লিডারশিপ” এর মতো স্কিলস অর্জন করেন। এগুলো রিজুমিতে তুলে ধরতে পারেন।
4. এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিজঃ আপনি যদি বিভিন্ন ভলান্টারি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য হয়ে থাকেন, তাহলে সেগুলো তুলে ধরতে পারেন। আপনি কোন সংগঠনে ছিলেন, কতোদিন ছিলেন, কোন পজিশনে থেকে কাজ করেছেন, কি কি প্রোগ্রামে কাজ করেছেন, কি অর্জন করেছেন, তা টু দ্যা পয়েন্টে উপস্থান করবেন। হতে পারে খেলাধুলার সংগঠন, আবৃত্তি, নাটক, নাচ-গান, বিতর্ক এর মতো যেকোনো কিছু। এ ধরনের কার্যক্রম আপনার কাজের দক্ষতা তুলে ধরবে।
5. এডুকেশনঃ আপনি কোথায় পড়াশুনা করেছেন, কোন সাবজেক্টে ছিলেন, রেজাল্ট, পাসের সন, এগুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে হবে। যারা ফ্রেশার, তাঁরা অবশ্যই রেজাল্ট উল্লেখ করবেন। কয়েক বছরের চাকুরির অভিজ্ঞতা হয়ে গেলে তখন আর রেজাল্ট দেয়ার প্রয়োজন হয়না। আপনার যদি কোনো সার্টিফিকেশন কোর্স করা থাকে, সেগুলো তুলে ধরুন।যাদের ৫/৭ বা ১০ বছরের অভিজ্ঞতা হয়ে যায়, তাদের ক্ষেত্রে এডুকেশনে স্কুল, কলেজ এর তথ্য না দিলেও সমস্যা নেই।
6. সেমিনার এবং ওয়ার্কশপঃ আপনি যদি কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন বিভিন্ন সেমিনার এবং ওয়ার্কশপে অংশগ্রহন করে থাকেন, তাহলে সেগুলো অবশ্যই রিজুমিতে উপস্থাপন করবেন। শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায়ই সবার উচিত সুযোগ বের করে মাঝে মাঝে সেমিনার বা ওয়ার্কশপে জয়েন করা। এগুলো থেকে অনেক কিছু শেখা যায়।
7. এওয়ার্ডসঃ অনেক শিক্ষার্থীই আছেন পড়াশুনাকালীন বিভিন্ন কম্পিটিশনে জয়ী হন, অথবা সংগঠনের কাজ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পুরষ্কার পেয়ে থাকেন। এ ধরনের এচিভমেন্ট থাকলে তা অবশ্যই রিজুমিতে উল্লেখ করতে হবে।
8. রেফারেন্সঃ একটা সময় রিজুমিতে রেফারেন্স দিতে হলেও, এখন আর তা প্রয়োজন হয়না। তাই রিজুমিতে রেফান্স না দেয়াই ভালো।
রিজুমি এমন একটি জিনিস, যা আপনার চাকুরী পাওয়াতে সবচেয়ে বেশী সাহায্য করবে। তাই এটা নিয়ে অবহেলা করা যাবেনা। সময় নিয়ে বুঝে রিজুমি বানিয়ে নিন। নিয়মিত আপডেট রাখুন অথবা আমাদের সাহায্য নিন।